ফেসবুকের লেখা যেভাবে কাজে আসে:
ভাদা বিরোধী/আধিপত্য বিরোধী লেখাগুলো যেভাবে কাজ করে...
ফেসবুকের লেখালেখি কোন কাজে আসে না এমন মন্তব্য করেছে (প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশী) এক ফেসবুক ফ্রেন্ড! উনার মন্তব্য থেকে বুঝা গেলো আমরা যারা লেখালেখি করছি তাদের কষ্ট/শ্রম অনর্থক। (?) উনার মন্তব্যগুলো খুবই কমন ছিলো, এবং অনেকেরেই মনের অব্যাক্ত কথা, তাই উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করছি। অতি সংক্ষেপে আমি ব্যাখ্যা করব-
সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে একটি পোস্ট করেছিলাম সেই পোস্টে দু;টি কমেন্ট করেছিলেন।
প্রথম কমেন্ট- "একরোখা লেখা না লিখে, প্রতিবছর চিকিৎসার জন্য কত মানুষ যে বাংলাদেশ থেকে মাদ্রাজে যায় এবং তাদের প্রাণ রক্ষা হয়, সে বিষয়ে আজ পর্যন্ত কোন পোষ্ট আপনার ওয়ালে দেখলাম না, আমাদের দেশের অভ্যন্তরে যদি আমাদেরই দুর্বলতা থাকে তাহলে সত্যি আপনার এই চেষ্টা নিরর্থক। সাইন্স, টেকনোলজি, ক্ষেপনাস্ত্র, পরমাণু ইত্যাদী বিষয়ে আমরা যে ভারত থেকে কত দুর্বল তার হিসেব আছে? ভারত আমাদের থেকে শক্তিশালি, আর সবাই ঈ শক্তের ভক্ত, নরমের জম। এমন অবস্থায় আমাদের অবস্থা আমেরিকার পাশে মেক্সিকোর মত। অন্য কোন জাতি এসে আপনাকে রক্ষা করবে না, নিজের আত্বরক্ষা নিজেকেই করে নিতে হয়।"
পয়েন্ট-১ "প্রতিবছর চিকিৎসার জন্য কত মানুষ যে বাংলাদেশ থেকে মাদ্রাজে যায় এবং তাদের প্রাণ রক্ষা হয়..."
-আরে ভাই, আপনি কি জানেন কতজন ভারতীয় এই চিকিৎসা *বাণিজ্যে করে বেঁচে আছে? চিকিৎসা কি আমাদের ফ্রী দিচ্ছে? এটা তো অর্থের বিনিময়ে বাণিজ্যিক সেবা। চিকিৎসা করাতে যাওয়া বাংলাদেশীরা যে ভারতের অর্থনীতি কে সমৃদ্ধ করছে সেটাও আপনাকে বুঝতে হবে। ভিসা খরচ, পরিবহন খরচ, থাকা-খাওয়ার খরচ তারপর চিকিৎসা খরচ বাবদ ভারত কত টাকা নিচ্ছে আপনার জানা আছে?! হোস্টেল, রিস্টোরেন্ট, হস্পিটালে কত হাজার হাজার ভারতীয় কাজ করে, নিজের পরিবার চালায় আপনার জানা আছে? কাদের টাকায় চালায়; এই চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশীদের টাকায়, বাঁচে হাজার লোকের সংসার। আর আমরা তো শুধু ভারতের থেকে চিকিৎসা নিই না, যার যার সাধ্য অনুযায়ী সিঙ্গাপুর, মালেয়শিয়া, আমেরিকা, চীন, জাপান সবখান থেকেই নিই। টাকার বিনিময়ে সেবাকে কেন আমরা দয়া বা করুণা হিসেবে মনে করব? আমেরিকান বা অন্য জাতিরা তো তাদের দেশে চিকিৎসা নেওয়ার কারণে আমাদের খোঁটা দেয় না। ছোট লোকরাই সামান্য অবদানকে ঢাক ঢোল বাজিয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করে আর মানুষকে খোঁটা মারে...ভারতীয়রা এরকমটা করে থাকে... আপনি সম্ভবত এ ধারণা/ভারতীদের থেকে ধার করেছেন।
কুমিল্লার সীমান্ত এলাকার ভারতের পূর্বাঞ্চলের অনেক ভারতীয় বাংলাদেশের কুমিল্লায় চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। ঘরের পাশে সস্তায় চিকিৎসা পাওয়া যায় বলে। বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে পশ্চিমবঙ্গ কাছে তাই তারা পশ্চিমবঙ্গে যায়। যাদের অবস্থা একটু ভালো/জটিল রোগে ভুগলে তারা মাদ্রাজে যায়।
পয়েন্ট-২- "সাইন্স, টেকনোলজি, ক্ষেপনাস্ত্র, পরমাণু ইত্যাদী বিষয়ে তাদের থেকেও দূর্বল..."
-হা হা হা, চিন্তার দাসত্ব হচ্ছ সবচেয়ে খারাপ দাসত্ব। চিন্তার দিক দিয়ে আপনি একজন ভারতীয় দাস। যে চিন্তা-চেতনায় একজন খাঁটি দাস, তার পারমাণবিক বোমা থাকলেও কি সে ব্যবহার করতে পারবে?
:P
নিশ্চিত সে তা পারবে না। বাংলাদেশের পরমাণু বোমা থাকলে আপনাদের মত দাসরা
তখন বলতো, “থাক বাবা, এসব বোমা টোমা মেরে অশান্তি ডেকে আনার মানে হয়না।
আমরা একটা মারলে তারা আমাদের দশটা মারবে। এমনিতে বেশ ভালো আছি।“
মায়া্নমারের ব্যাপারে এমনটাই তো দেখলাম...!
সাইন্স, টেকনোলজি, ক্ষেপনাস্ত্র, পরমাণু ...ইত্যাদি ইত্যাদি, আপনি যা বলেছেন তার চেয়ে ভারতের আরো অনেক কিছু আছে তাতে আমার কি? আমি কেন ভারতের প্রশংসা করব? এটা তো ভারতীয়দের কাজ, আমার না। ১৩০কোটি+ জনসংখ্যার দেশে এটা এমন কি সফলতা বলুন তো? যাদের জনসংখ্যার অর্ধেকেরো বেশি খোলা আকাশের নিচে হাগু করে পৃথিবীর পরিবেশকে নষ্ট করছে। অপুষ্টি, দারিদ্রতা, নিরক্ষরতাসহ অন্যান্য দূর্যোগ ত রয়েছেই। ভারতের দরিদ্রের সংখ্যার কাছে এসব সফলতার কোন মূল্য নেই/তুচ্ছ দেখায়। ভারতের চেয়ে ছোট আয়তনের কম জনসংখ্যার অনেক উন্নত দেশ রয়েছে যেমন, জাপান, কোরিয়া, ইস্রাইল,ফ্রান্স, সুইডেনসহ ইউরোপিয়ান অনেক দেশের কাছে ভারতের এসব অর্জন তুচ্ছ। কেন ভারতের বিরোধীতা করছি এ বিষয়ে আগেও আলোচনা করেছি- {(কেন বিরোধীতা করছি goo.gl/v3WjRc ) / (কেন বিরোধীতা করা উচিত goo.gl/v3WjRc )}
পয়েন্ট৩- "আর সবাই ঈ শক্তের ভক্ত, নরমের জম/নিজের আত্বরক্ষা নিজেকেই করে নিতে হয়..."
-ঠিক বলেছেন সবাই শক্তের ভক্ত তা পাকিস্তানি, নেপালিরা বুঝলেও আমরা বুঝতে পারিনি। আত্মমর্যাদাবোধ, সাহস আমাদের নেতাদেরও নেই; আপনাদের মত অধিকাংশ মানসিক দাসদের নেই। মানসিকভাবে দাস হয়ে থাকলে কি শক্ত হওয়া যায়? দাস হওয়ার আগে যারা দাসত্বের শিকল পড়ে নেয় তাদের দিয়ে কিচ্ছু হবেনা।
পয়েন্ট-৪- ভারত আমাদের থেকে শক্তিশালি তাদের পরমাণু আছে...
-একটা কথা আছে, 'বনের বাঘে খায় না, মনের বাঘে খায়।' আপনাদের মত শিশুসুলভ (ভিতু) ধর্মীয় জ্ঞানহীন, যাদের ইতিহাস জ্ঞান খুবই সীমিত তারা সবসময় আধুনিক অস্ত্রকে এবং সংখ্যাধিক্যকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এসব হচ্ছে ভারতীয় মূর্খদের (সবাই নয়) যুক্তি/চিন্তার খোরাক যে, "১৫০ কোটি মানুষ মুতে দিলে বাংলাদেশ ভেসে যাবে/একটা বোম ফালাইলে তোদের দেশ ঢেবে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি।“ বাস্তবতা কি তাই? অথচ মুস্লিমদের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই যুদ্ধ জয়ের ক্ষেত্রে এসবের কোন গুরুত্ব নেই। আপনি/আপনারা হয়তো আমার সব পোস্ট পড়েন না তাই এসব কথা বার বার বলেন। আপনাদের কাছে এর আগে আমি ভিয়েতনাম এবং আফগানিস্তানে কিভাবে সাম্রাজ্যবাদীরা মার খেয়েছে সেই ইতিহাস তুলে ধরেছিলাম। ( goo.gl/7J53Jz ভিয়েত্নাম/আফগান goo.gl/1E8bGz ) সাম্রাজ্যবাদীদের শক্তি বেশি বলে আমরা তাদের অন্যায়কে মেনে নিব? কোন প্রতিবাদ করবো না? ঠাকুর সাহেব বলেছিলেন, “অন্যায় যে করে, অন্যায় যে সহে দু’জনে সমান অপরাধী।“ মুসলিমরা এ কথা কইলে তো কইবেন তারা গজ্ঞী...
:P
ভারত-পাকিস্তানের পরমাণুকে অনর্থক ভয় করার প্রয়োজন নেই। তাদের পরমাণু
বোমা কেবল শোকেজে সাজিয়ে রাখার জন্য, ব্যবহারের জন্য নয়। ( ভারতের শক্তি
ঠিক কতটুক - goo.gl/arxuEW)
দ্বিতীয় কমেন্ট- "আপনার বিরোধীতা নিরর্থক, শুধু ফেইসবুকে সীমাবদ্ধ, ফলাফল শুন্য এবং এর কোনই ফিডব্যাক নাই। আপনার বিরোধীতা হতে পারে যৌক্তিক, কিন্তু এই বিরোধীতা আর সমস্যা সমাধান করার মতো ক্ষমতাও আপনার নেই। আপনার বিরোধীতা কোন সমাধানের পথ নয় বরং তা ফেইসবুক ব্যবহারকারী বাংলাদেশ এবং ভারতীয় ইউজারদের মধ্যে কেবল একে অপরের প্রতি হিংসা আর বিদ্বেষ তৈরিতে কাজ করছে। এর আউটপুট শুন্য এবং দিনশেষে আপনি আপনার কিছু কাল্পনিক চিন্তায় বাস্তবতার লেশ মাত্র প্রতিফলনও খুজে পাবেন না....."
পয়েন্ট-১ "আপনার বিরোধীতা নিরর্থক, শুধু ফেইসবুকে সীমাবদ্ধ, ফলাফল শুন্য এবং এর কোনই ফিডব্যাক নাই।''
-জ্বী ভাইয়া, আমিও একসময় এরকম ভেবে ফেসবুক ছেড়ে দিয়েছিলাম, আবারো ফিরে এসেছি। তার কারণ আমি চিন্তা করে দেখেছি আমি আওয়ামী লীগ থেকে ফেসবুক/অনলাইন পত্রিকা/ব্লগ এসব পড়ে মুসলিমে পরিণত হয়েছি। এরকম অনেক মানুষ পরিবর্তন হচ্ছে। যারা পরিবর্তন হবেনা তারা কখনোই হবে না। যারা নিজের পরিবর্তন চায় আমরা কেবল তাদের জন্যই লেখি। আমি প্রতি বছর আমার ফ্রেন্ডলিস্ট আপডেট করি। আওয়ামী লীগ/হিন্দু ধর্মালম্বিদের এড করি, যখন দেখি তাদের মধ্যে পরিবর্তন/পজেটিভ চিন্তা এসে গেছে তখন তাদের ছেড়ে দিয়ে নতুনদের এড করি। নিজেকে পরিবর্তন করার বাকি কাজটা তাদের; আমার নয়, আমি কেবল পথ দেখিয়ে দিই। পথ চিনে গেলেই আমার কাজ শেষ।
আমার লেখা শুধু ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ! এটা হচ্ছে বোকার মতো কথা। ফেসবুকের কোন পোস্টই ফেসবুকে সীমাবদ্ধ নয়, হোক সেটা ভালো বা খারাপ পোস্ট। রাজন হত্যা, বদরুলের বিচারসহ অসংখ্য সমস্যার সমাধান হয়েছে ফেসবুকের মাধ্যমে। যদি ফেসবুকের লেখা ফেসবুকে সীমাবদ্ধ হতো তাহলে সরকার বার বার ফেসবুক বন্ধ করতো না। আধিপত্য বিরোধী লেখকদের গুম, খুন, নির্যাতন করতো না। প্রত্যেক জাতির স্বাধীনতার খোরাক হচ্ছে আধিপত্যের বিরোধীতা। আমার ফ্রেন্ডলিস্টে ৩০০০+ মানুষ আছে। আমার প্রতি পোস্টে গড়ে লাইক পড়ে ২০০, এই ২০০ জনের মধ্যে সবাই পোস্ট পড়ে না। আবারা যারা পড়ে তাদের অনেকে লাইক দেয় না/কমেন্টো করেনা। ধরে নিলাম ১৫০ জন লোক আমার পোস্ট পড়ে। একবার ভাবুন তো, আমার প্রতিদিন ১৫০ জন মানুষকে কোন একটা মাঠে জড়ো করে বক্তৃতা/ভাষণ দেওয়া সম্ভব? সম্ভব নয়; আমার অবস্থান থেকে কি এই ১৫০ সংখ্যাটা অনেক বেশি নয়? আবার এই ১৫০ জনের মধ্যে আমার লেখা কপি করে পোস্ট দিচ্ছে অনেকে। তাদের ফেন্ডলিস্টে যদি ১০০০ করেও লোক থাকে তাহলে চিন্তা করে দেখেছেন কত লোকের কাছে আমার লেখা পৌঁছে যাচ্ছে।
আমার লেখার ফলাফল কি সত্যিই শূন্য!? বারাক ওবামা, ভ্লাদিমার পুতিন, এরদোগান তারা সকলে ৮০০ কোটি মানুষের সমষ্টি নয়। তারা প্রত্যেকে একেকজন ব্যাক্তি। কিন্তু তাদের মতো একজন ব্যাক্তি পৃথিবীর যে পরিবর্তন আনতে পারে/পারবে তা ৮০০ কোটি মানুষ কখনই পারবে না। আমার ফ্রেন্ডলিস্টে অল্প বয়স্ক তরুণ রয়েছে যারা এখনো পড়াশুনা করছে/আবার অনেকে রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত। তাদের মধ্যে কেউ যদি বাংলাদেশের নেতৃত্বে পৌছে যায় তাহলে আমার লেখা কি বৃথা যাবে? ২০০ নয়, ১৫০ নয়, ১০০ নয়, ৫০ নয়, ১০ নয়, মাত্র একজন যদি পরিবর্তন হয় সেটাই যথেষ্ট। আর আমি কতটুকু ফিডব্যাক পাই তা আমার ইনবক্সই সাক্ষী।
পয়েন্ট২- "আপনার বিরোধীতা হতে পারে যৌক্তিক, কিন্তু এই বিরোধীতা আর সমস্যা সমাধান করার মতো ক্ষমতাও আপনার নেই।''
-ধন্যবাদ, আমার লেখা শুধু যুক্তিক নয়, সত্যও বটে। ঠিক বলেছেন, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা আমার/আমাদের নেই এটা সত্যি। যার আছে তিনি হলেন আমাদের নেতা। আর নেতা নির্বাচন করে ভোটাররা। লেখালেখির মাধ্যমে ভোটারদের ভোট* পরিবর্তন করি আমরা (ফেসবুক এক্টিভিটিসরা)। যদি আমি ভোট/গণতন্ত্র সিস্টেমকে পছন্দ করিনা, কিন্তু এর বাহিরে যাওয়াও সম্ভব নয়। যতক্ষন না আমরা পূর্ণাংঙ্গ মুসলিম হচ্ছি।
পয়েন্ট৩- "আপনার বিরোধীতা কোন সমাধানের পথ নয় বরং তা ফেইসবুক ব্যবহারকারী বাংলাদেশ এবং ভারতীয় ইউজারদের মধ্যে কেবল একে অপরের প্রতি হিংসা আর বিদ্বেষ তৈরিতে কাজ করছে।"
-হিংসা আর বিদ্বেষ এমনিতেই তৈরি হয়ে আছে। ধর্ম হচ্ছে হিন্দু-মুস্লিমের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্টিশন/দেওয়াল। এই দেওয়াল ভাঙ্গা সম্ভব নয়। দেওয়ালটা কত মজবুত তা কলকাতার বাংলা পত্রিকার গালাগালি বক্সে (কমেন্ট) গেলেই দেখতে পাবেন। একজন শিক্ষিত/সচেতন ভারতীয় তার রাষ্ট্র দ্বারা জুলুমের স্বীকার মজলুমের প্রতিবাদের বিরোধীতা করবে না। আমরা ভারতের যেসব জুলুমের ব্যাপারে লেখালেখি করি তা ভারত বা বাংলাদেশ অস্বীকার করতে পারবে না। আমরা যদি মিথ্যে প্রোপাগান্ডা চলাতাম তাহলে বিদ্বেষ বাড়ার সম্ভবনা ছিল। সত্য বলার পরও যদি বিদ্বেষ বাড়ে তাহলে আমরা কারো বিদ্বেষ বাড়ার আশঙ্কায় নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে; আমাদের উপর অন্যের জুলুমের ব্যাপারে চুপ থাকতে পারিনা। চুপ থাকা যুক্তিকও নয়, চুপ থাকলে বরং নিজের প্রতি জুলুম করা হবে। শত্রু দেশের মানুষের কাছে বিদ্বেষের বিপরীতে ভালোবাসা প্রত্যাশা করা অন্ধ, বধির, অক্ষম লোকদের কাজ। সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে হিন্দুরা ভালো ব্যবহার করলেও রাষ্ট্রিয়ভাবে মুসলিমদের জুলুম করার ক্ষেত্রে তারা সবাই এক। এখন যদি আমাদের বিরুদ্ধে তাদের কোন নেতা যুদ্ধ ঘোষণা করে তাহলে তারা (ভারতীয় সাধারণ) কি আমাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধ করবে/যুদ্ধের ব্যাপারে চুপ থাকবে? থাকবে না। আমাদের বিরুদ্ধে কোমরে গামছা বেঁধে যুদ্ধে নামবে। বাংলাদেশের উপর জুলুমের ব্যাপারে তারা তাদের রাষ্ট্রের প্রতি সন্তুষ্ট/ অন্য দেশের প্রতি আধিপত্য বিস্তারকে তারা ইতিবাচক (পজেটিভ) হিসেবে নেয়। আর যুদ্ধকে কিভাবে নিবে সেটা আপনি নিজেই ভেবে দেখুন।
পয়েন্ট-৪- "আউটপুট শুন্য এবং দিনশেষে আপনি আপনার কিছু কাল্পনিক চিন্তায় বাস্তবতার লেশ মাত্র প্রতিফলনও খুঁজে পাবেন না..."
-নিজেক দিয়ে আপনি যখন অন্যকে কল্পনা/বিচার করবেন তখন তাকে আপনি আপনার মতো চোর, ভাটপার ঠকবাজ, ধান্ধাবাজ অনেক কিছুই ভাবতে পারেন (বুঝার জন্য বলেছি)। যাকে ভাবছেন তিনি হয়তো চোর নন, ভাটপারও নন। হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন, "পাপী সবাইকে নিজের মতো মনে করে।" আপনার আশে পাশের মানুষগুলো/আপনি নিজেও হয়তো নিজেকে পরিবর্তন না করে অন্যদের পরিবর্তন করার চিন্তা/চেষ্টা করেন তাই হয়তো এমনটা ভাবছেন। সীমান্ত হত্যা নিয়ে যখন ২০১২ সালে সাইবার যুদ্ধ শুরু হয় তখন অনলাইন এক্টিভিটিসরা এয়ারটেল সহ ভারতীয় সকল পণ্য বয়কট করতে বলেছিল। সাধ্যনুযায়ী এয়ারটেলসহ ভারতীয় সব পণ্য কেনা বন্ধ করেছি। একটা ব্লেড কিনতেও এখন চিন্তা করি। আমি জানি এতে ভারতের কিছু হবেনা। কিন্তু কে কি করলো আমার দেখার বিষয় নয়। আমি আমার অবস্থানে ঠিক থাকতে চাই; সৎ থাকতে চাই।
আমাদের এসব অন্যায়, জুলুমের ব্যাপারে লেখাগুলো মানুষের মনে তিল তিল করে ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে/ক্ষোভ জমা হচ্ছে। একসময় এই ক্ষোভ ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির মত বিস্ফোরণ ঘটাবে। যা আশে-পাশের অত্যাচারীদের জ্বালিয়ে ছাই করে দিবে ইনশা আল্লাহ।
শেষ কথা- যারা লেখালেখি করছেন তারা কখনো এসব লোকের কথায় কান দিবেন না। মনে রাখবেন অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য বলা সবচেয়ে বড় জিহাদ। ফেসবুকে যে শুধু আমরা সামাজিক পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি করি তা নয়। জাহিদ নামে আমার এক ফেসবু্ক ফ্রেন্ড বলেছেন, 'ফেসবুক হচ্ছে একটি ঝুড়ি যেখানে আমরা মনের ময়লাগুলো নিক্ষেপ করি৷ মনটাকে হালকা করি...’
সাহসী লেখকদের ফলো করুন; দাসত্বের আহ্বান থেকে দূরে থাকুন। হ্যাপি ফেসবুকিং...
ফেসবুকের লেখালেখি কোন কাজে আসে না এমন মন্তব্য করেছে (প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশী) এক ফেসবুক ফ্রেন্ড! উনার মন্তব্য থেকে বুঝা গেলো আমরা যারা লেখালেখি করছি তাদের কষ্ট/শ্রম অনর্থক। (?) উনার মন্তব্যগুলো খুবই কমন ছিলো, এবং অনেকেরেই মনের অব্যাক্ত কথা, তাই উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করছি। অতি সংক্ষেপে আমি ব্যাখ্যা করব-
সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে একটি পোস্ট করেছিলাম সেই পোস্টে দু;টি কমেন্ট করেছিলেন।
প্রথম কমেন্ট- "একরোখা লেখা না লিখে, প্রতিবছর চিকিৎসার জন্য কত মানুষ যে বাংলাদেশ থেকে মাদ্রাজে যায় এবং তাদের প্রাণ রক্ষা হয়, সে বিষয়ে আজ পর্যন্ত কোন পোষ্ট আপনার ওয়ালে দেখলাম না, আমাদের দেশের অভ্যন্তরে যদি আমাদেরই দুর্বলতা থাকে তাহলে সত্যি আপনার এই চেষ্টা নিরর্থক। সাইন্স, টেকনোলজি, ক্ষেপনাস্ত্র, পরমাণু ইত্যাদী বিষয়ে আমরা যে ভারত থেকে কত দুর্বল তার হিসেব আছে? ভারত আমাদের থেকে শক্তিশালি, আর সবাই ঈ শক্তের ভক্ত, নরমের জম। এমন অবস্থায় আমাদের অবস্থা আমেরিকার পাশে মেক্সিকোর মত। অন্য কোন জাতি এসে আপনাকে রক্ষা করবে না, নিজের আত্বরক্ষা নিজেকেই করে নিতে হয়।"
পয়েন্ট-১ "প্রতিবছর চিকিৎসার জন্য কত মানুষ যে বাংলাদেশ থেকে মাদ্রাজে যায় এবং তাদের প্রাণ রক্ষা হয়..."
-আরে ভাই, আপনি কি জানেন কতজন ভারতীয় এই চিকিৎসা *বাণিজ্যে করে বেঁচে আছে? চিকিৎসা কি আমাদের ফ্রী দিচ্ছে? এটা তো অর্থের বিনিময়ে বাণিজ্যিক সেবা। চিকিৎসা করাতে যাওয়া বাংলাদেশীরা যে ভারতের অর্থনীতি কে সমৃদ্ধ করছে সেটাও আপনাকে বুঝতে হবে। ভিসা খরচ, পরিবহন খরচ, থাকা-খাওয়ার খরচ তারপর চিকিৎসা খরচ বাবদ ভারত কত টাকা নিচ্ছে আপনার জানা আছে?! হোস্টেল, রিস্টোরেন্ট, হস্পিটালে কত হাজার হাজার ভারতীয় কাজ করে, নিজের পরিবার চালায় আপনার জানা আছে? কাদের টাকায় চালায়; এই চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশীদের টাকায়, বাঁচে হাজার লোকের সংসার। আর আমরা তো শুধু ভারতের থেকে চিকিৎসা নিই না, যার যার সাধ্য অনুযায়ী সিঙ্গাপুর, মালেয়শিয়া, আমেরিকা, চীন, জাপান সবখান থেকেই নিই। টাকার বিনিময়ে সেবাকে কেন আমরা দয়া বা করুণা হিসেবে মনে করব? আমেরিকান বা অন্য জাতিরা তো তাদের দেশে চিকিৎসা নেওয়ার কারণে আমাদের খোঁটা দেয় না। ছোট লোকরাই সামান্য অবদানকে ঢাক ঢোল বাজিয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করে আর মানুষকে খোঁটা মারে...ভারতীয়রা এরকমটা করে থাকে... আপনি সম্ভবত এ ধারণা/ভারতীদের থেকে ধার করেছেন।
কুমিল্লার সীমান্ত এলাকার ভারতের পূর্বাঞ্চলের অনেক ভারতীয় বাংলাদেশের কুমিল্লায় চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। ঘরের পাশে সস্তায় চিকিৎসা পাওয়া যায় বলে। বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে পশ্চিমবঙ্গ কাছে তাই তারা পশ্চিমবঙ্গে যায়। যাদের অবস্থা একটু ভালো/জটিল রোগে ভুগলে তারা মাদ্রাজে যায়।
পয়েন্ট-২- "সাইন্স, টেকনোলজি, ক্ষেপনাস্ত্র, পরমাণু ইত্যাদী বিষয়ে তাদের থেকেও দূর্বল..."
-হা হা হা, চিন্তার দাসত্ব হচ্ছ সবচেয়ে খারাপ দাসত্ব। চিন্তার দিক দিয়ে আপনি একজন ভারতীয় দাস। যে চিন্তা-চেতনায় একজন খাঁটি দাস, তার পারমাণবিক বোমা থাকলেও কি সে ব্যবহার করতে পারবে?

সাইন্স, টেকনোলজি, ক্ষেপনাস্ত্র, পরমাণু ...ইত্যাদি ইত্যাদি, আপনি যা বলেছেন তার চেয়ে ভারতের আরো অনেক কিছু আছে তাতে আমার কি? আমি কেন ভারতের প্রশংসা করব? এটা তো ভারতীয়দের কাজ, আমার না। ১৩০কোটি+ জনসংখ্যার দেশে এটা এমন কি সফলতা বলুন তো? যাদের জনসংখ্যার অর্ধেকেরো বেশি খোলা আকাশের নিচে হাগু করে পৃথিবীর পরিবেশকে নষ্ট করছে। অপুষ্টি, দারিদ্রতা, নিরক্ষরতাসহ অন্যান্য দূর্যোগ ত রয়েছেই। ভারতের দরিদ্রের সংখ্যার কাছে এসব সফলতার কোন মূল্য নেই/তুচ্ছ দেখায়। ভারতের চেয়ে ছোট আয়তনের কম জনসংখ্যার অনেক উন্নত দেশ রয়েছে যেমন, জাপান, কোরিয়া, ইস্রাইল,ফ্রান্স, সুইডেনসহ ইউরোপিয়ান অনেক দেশের কাছে ভারতের এসব অর্জন তুচ্ছ। কেন ভারতের বিরোধীতা করছি এ বিষয়ে আগেও আলোচনা করেছি- {(কেন বিরোধীতা করছি goo.gl/v3WjRc ) / (কেন বিরোধীতা করা উচিত goo.gl/v3WjRc )}
পয়েন্ট৩- "আর সবাই ঈ শক্তের ভক্ত, নরমের জম/নিজের আত্বরক্ষা নিজেকেই করে নিতে হয়..."
-ঠিক বলেছেন সবাই শক্তের ভক্ত তা পাকিস্তানি, নেপালিরা বুঝলেও আমরা বুঝতে পারিনি। আত্মমর্যাদাবোধ, সাহস আমাদের নেতাদেরও নেই; আপনাদের মত অধিকাংশ মানসিক দাসদের নেই। মানসিকভাবে দাস হয়ে থাকলে কি শক্ত হওয়া যায়? দাস হওয়ার আগে যারা দাসত্বের শিকল পড়ে নেয় তাদের দিয়ে কিচ্ছু হবেনা।
পয়েন্ট-৪- ভারত আমাদের থেকে শক্তিশালি তাদের পরমাণু আছে...
-একটা কথা আছে, 'বনের বাঘে খায় না, মনের বাঘে খায়।' আপনাদের মত শিশুসুলভ (ভিতু) ধর্মীয় জ্ঞানহীন, যাদের ইতিহাস জ্ঞান খুবই সীমিত তারা সবসময় আধুনিক অস্ত্রকে এবং সংখ্যাধিক্যকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এসব হচ্ছে ভারতীয় মূর্খদের (সবাই নয়) যুক্তি/চিন্তার খোরাক যে, "১৫০ কোটি মানুষ মুতে দিলে বাংলাদেশ ভেসে যাবে/একটা বোম ফালাইলে তোদের দেশ ঢেবে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি।“ বাস্তবতা কি তাই? অথচ মুস্লিমদের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই যুদ্ধ জয়ের ক্ষেত্রে এসবের কোন গুরুত্ব নেই। আপনি/আপনারা হয়তো আমার সব পোস্ট পড়েন না তাই এসব কথা বার বার বলেন। আপনাদের কাছে এর আগে আমি ভিয়েতনাম এবং আফগানিস্তানে কিভাবে সাম্রাজ্যবাদীরা মার খেয়েছে সেই ইতিহাস তুলে ধরেছিলাম। ( goo.gl/7J53Jz ভিয়েত্নাম/আফগান goo.gl/1E8bGz ) সাম্রাজ্যবাদীদের শক্তি বেশি বলে আমরা তাদের অন্যায়কে মেনে নিব? কোন প্রতিবাদ করবো না? ঠাকুর সাহেব বলেছিলেন, “অন্যায় যে করে, অন্যায় যে সহে দু’জনে সমান অপরাধী।“ মুসলিমরা এ কথা কইলে তো কইবেন তারা গজ্ঞী...

দ্বিতীয় কমেন্ট- "আপনার বিরোধীতা নিরর্থক, শুধু ফেইসবুকে সীমাবদ্ধ, ফলাফল শুন্য এবং এর কোনই ফিডব্যাক নাই। আপনার বিরোধীতা হতে পারে যৌক্তিক, কিন্তু এই বিরোধীতা আর সমস্যা সমাধান করার মতো ক্ষমতাও আপনার নেই। আপনার বিরোধীতা কোন সমাধানের পথ নয় বরং তা ফেইসবুক ব্যবহারকারী বাংলাদেশ এবং ভারতীয় ইউজারদের মধ্যে কেবল একে অপরের প্রতি হিংসা আর বিদ্বেষ তৈরিতে কাজ করছে। এর আউটপুট শুন্য এবং দিনশেষে আপনি আপনার কিছু কাল্পনিক চিন্তায় বাস্তবতার লেশ মাত্র প্রতিফলনও খুজে পাবেন না....."
পয়েন্ট-১ "আপনার বিরোধীতা নিরর্থক, শুধু ফেইসবুকে সীমাবদ্ধ, ফলাফল শুন্য এবং এর কোনই ফিডব্যাক নাই।''
-জ্বী ভাইয়া, আমিও একসময় এরকম ভেবে ফেসবুক ছেড়ে দিয়েছিলাম, আবারো ফিরে এসেছি। তার কারণ আমি চিন্তা করে দেখেছি আমি আওয়ামী লীগ থেকে ফেসবুক/অনলাইন পত্রিকা/ব্লগ এসব পড়ে মুসলিমে পরিণত হয়েছি। এরকম অনেক মানুষ পরিবর্তন হচ্ছে। যারা পরিবর্তন হবেনা তারা কখনোই হবে না। যারা নিজের পরিবর্তন চায় আমরা কেবল তাদের জন্যই লেখি। আমি প্রতি বছর আমার ফ্রেন্ডলিস্ট আপডেট করি। আওয়ামী লীগ/হিন্দু ধর্মালম্বিদের এড করি, যখন দেখি তাদের মধ্যে পরিবর্তন/পজেটিভ চিন্তা এসে গেছে তখন তাদের ছেড়ে দিয়ে নতুনদের এড করি। নিজেকে পরিবর্তন করার বাকি কাজটা তাদের; আমার নয়, আমি কেবল পথ দেখিয়ে দিই। পথ চিনে গেলেই আমার কাজ শেষ।
আমার লেখা শুধু ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ! এটা হচ্ছে বোকার মতো কথা। ফেসবুকের কোন পোস্টই ফেসবুকে সীমাবদ্ধ নয়, হোক সেটা ভালো বা খারাপ পোস্ট। রাজন হত্যা, বদরুলের বিচারসহ অসংখ্য সমস্যার সমাধান হয়েছে ফেসবুকের মাধ্যমে। যদি ফেসবুকের লেখা ফেসবুকে সীমাবদ্ধ হতো তাহলে সরকার বার বার ফেসবুক বন্ধ করতো না। আধিপত্য বিরোধী লেখকদের গুম, খুন, নির্যাতন করতো না। প্রত্যেক জাতির স্বাধীনতার খোরাক হচ্ছে আধিপত্যের বিরোধীতা। আমার ফ্রেন্ডলিস্টে ৩০০০+ মানুষ আছে। আমার প্রতি পোস্টে গড়ে লাইক পড়ে ২০০, এই ২০০ জনের মধ্যে সবাই পোস্ট পড়ে না। আবারা যারা পড়ে তাদের অনেকে লাইক দেয় না/কমেন্টো করেনা। ধরে নিলাম ১৫০ জন লোক আমার পোস্ট পড়ে। একবার ভাবুন তো, আমার প্রতিদিন ১৫০ জন মানুষকে কোন একটা মাঠে জড়ো করে বক্তৃতা/ভাষণ দেওয়া সম্ভব? সম্ভব নয়; আমার অবস্থান থেকে কি এই ১৫০ সংখ্যাটা অনেক বেশি নয়? আবার এই ১৫০ জনের মধ্যে আমার লেখা কপি করে পোস্ট দিচ্ছে অনেকে। তাদের ফেন্ডলিস্টে যদি ১০০০ করেও লোক থাকে তাহলে চিন্তা করে দেখেছেন কত লোকের কাছে আমার লেখা পৌঁছে যাচ্ছে।
আমার লেখার ফলাফল কি সত্যিই শূন্য!? বারাক ওবামা, ভ্লাদিমার পুতিন, এরদোগান তারা সকলে ৮০০ কোটি মানুষের সমষ্টি নয়। তারা প্রত্যেকে একেকজন ব্যাক্তি। কিন্তু তাদের মতো একজন ব্যাক্তি পৃথিবীর যে পরিবর্তন আনতে পারে/পারবে তা ৮০০ কোটি মানুষ কখনই পারবে না। আমার ফ্রেন্ডলিস্টে অল্প বয়স্ক তরুণ রয়েছে যারা এখনো পড়াশুনা করছে/আবার অনেকে রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত। তাদের মধ্যে কেউ যদি বাংলাদেশের নেতৃত্বে পৌছে যায় তাহলে আমার লেখা কি বৃথা যাবে? ২০০ নয়, ১৫০ নয়, ১০০ নয়, ৫০ নয়, ১০ নয়, মাত্র একজন যদি পরিবর্তন হয় সেটাই যথেষ্ট। আর আমি কতটুকু ফিডব্যাক পাই তা আমার ইনবক্সই সাক্ষী।
পয়েন্ট২- "আপনার বিরোধীতা হতে পারে যৌক্তিক, কিন্তু এই বিরোধীতা আর সমস্যা সমাধান করার মতো ক্ষমতাও আপনার নেই।''
-ধন্যবাদ, আমার লেখা শুধু যুক্তিক নয়, সত্যও বটে। ঠিক বলেছেন, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা আমার/আমাদের নেই এটা সত্যি। যার আছে তিনি হলেন আমাদের নেতা। আর নেতা নির্বাচন করে ভোটাররা। লেখালেখির মাধ্যমে ভোটারদের ভোট* পরিবর্তন করি আমরা (ফেসবুক এক্টিভিটিসরা)। যদি আমি ভোট/গণতন্ত্র সিস্টেমকে পছন্দ করিনা, কিন্তু এর বাহিরে যাওয়াও সম্ভব নয়। যতক্ষন না আমরা পূর্ণাংঙ্গ মুসলিম হচ্ছি।
পয়েন্ট৩- "আপনার বিরোধীতা কোন সমাধানের পথ নয় বরং তা ফেইসবুক ব্যবহারকারী বাংলাদেশ এবং ভারতীয় ইউজারদের মধ্যে কেবল একে অপরের প্রতি হিংসা আর বিদ্বেষ তৈরিতে কাজ করছে।"
-হিংসা আর বিদ্বেষ এমনিতেই তৈরি হয়ে আছে। ধর্ম হচ্ছে হিন্দু-মুস্লিমের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্টিশন/দেওয়াল। এই দেওয়াল ভাঙ্গা সম্ভব নয়। দেওয়ালটা কত মজবুত তা কলকাতার বাংলা পত্রিকার গালাগালি বক্সে (কমেন্ট) গেলেই দেখতে পাবেন। একজন শিক্ষিত/সচেতন ভারতীয় তার রাষ্ট্র দ্বারা জুলুমের স্বীকার মজলুমের প্রতিবাদের বিরোধীতা করবে না। আমরা ভারতের যেসব জুলুমের ব্যাপারে লেখালেখি করি তা ভারত বা বাংলাদেশ অস্বীকার করতে পারবে না। আমরা যদি মিথ্যে প্রোপাগান্ডা চলাতাম তাহলে বিদ্বেষ বাড়ার সম্ভবনা ছিল। সত্য বলার পরও যদি বিদ্বেষ বাড়ে তাহলে আমরা কারো বিদ্বেষ বাড়ার আশঙ্কায় নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে; আমাদের উপর অন্যের জুলুমের ব্যাপারে চুপ থাকতে পারিনা। চুপ থাকা যুক্তিকও নয়, চুপ থাকলে বরং নিজের প্রতি জুলুম করা হবে। শত্রু দেশের মানুষের কাছে বিদ্বেষের বিপরীতে ভালোবাসা প্রত্যাশা করা অন্ধ, বধির, অক্ষম লোকদের কাজ। সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে হিন্দুরা ভালো ব্যবহার করলেও রাষ্ট্রিয়ভাবে মুসলিমদের জুলুম করার ক্ষেত্রে তারা সবাই এক। এখন যদি আমাদের বিরুদ্ধে তাদের কোন নেতা যুদ্ধ ঘোষণা করে তাহলে তারা (ভারতীয় সাধারণ) কি আমাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধ করবে/যুদ্ধের ব্যাপারে চুপ থাকবে? থাকবে না। আমাদের বিরুদ্ধে কোমরে গামছা বেঁধে যুদ্ধে নামবে। বাংলাদেশের উপর জুলুমের ব্যাপারে তারা তাদের রাষ্ট্রের প্রতি সন্তুষ্ট/ অন্য দেশের প্রতি আধিপত্য বিস্তারকে তারা ইতিবাচক (পজেটিভ) হিসেবে নেয়। আর যুদ্ধকে কিভাবে নিবে সেটা আপনি নিজেই ভেবে দেখুন।
পয়েন্ট-৪- "আউটপুট শুন্য এবং দিনশেষে আপনি আপনার কিছু কাল্পনিক চিন্তায় বাস্তবতার লেশ মাত্র প্রতিফলনও খুঁজে পাবেন না..."
-নিজেক দিয়ে আপনি যখন অন্যকে কল্পনা/বিচার করবেন তখন তাকে আপনি আপনার মতো চোর, ভাটপার ঠকবাজ, ধান্ধাবাজ অনেক কিছুই ভাবতে পারেন (বুঝার জন্য বলেছি)। যাকে ভাবছেন তিনি হয়তো চোর নন, ভাটপারও নন। হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন, "পাপী সবাইকে নিজের মতো মনে করে।" আপনার আশে পাশের মানুষগুলো/আপনি নিজেও হয়তো নিজেকে পরিবর্তন না করে অন্যদের পরিবর্তন করার চিন্তা/চেষ্টা করেন তাই হয়তো এমনটা ভাবছেন। সীমান্ত হত্যা নিয়ে যখন ২০১২ সালে সাইবার যুদ্ধ শুরু হয় তখন অনলাইন এক্টিভিটিসরা এয়ারটেল সহ ভারতীয় সকল পণ্য বয়কট করতে বলেছিল। সাধ্যনুযায়ী এয়ারটেলসহ ভারতীয় সব পণ্য কেনা বন্ধ করেছি। একটা ব্লেড কিনতেও এখন চিন্তা করি। আমি জানি এতে ভারতের কিছু হবেনা। কিন্তু কে কি করলো আমার দেখার বিষয় নয়। আমি আমার অবস্থানে ঠিক থাকতে চাই; সৎ থাকতে চাই।
আমাদের এসব অন্যায়, জুলুমের ব্যাপারে লেখাগুলো মানুষের মনে তিল তিল করে ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে/ক্ষোভ জমা হচ্ছে। একসময় এই ক্ষোভ ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির মত বিস্ফোরণ ঘটাবে। যা আশে-পাশের অত্যাচারীদের জ্বালিয়ে ছাই করে দিবে ইনশা আল্লাহ।
শেষ কথা- যারা লেখালেখি করছেন তারা কখনো এসব লোকের কথায় কান দিবেন না। মনে রাখবেন অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য বলা সবচেয়ে বড় জিহাদ। ফেসবুকে যে শুধু আমরা সামাজিক পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি করি তা নয়। জাহিদ নামে আমার এক ফেসবু্ক ফ্রেন্ড বলেছেন, 'ফেসবুক হচ্ছে একটি ঝুড়ি যেখানে আমরা মনের ময়লাগুলো নিক্ষেপ করি৷ মনটাকে হালকা করি...’
সাহসী লেখকদের ফলো করুন; দাসত্বের আহ্বান থেকে দূরে থাকুন। হ্যাপি ফেসবুকিং...
