ফেসবুকে যেভাবে লিখলে নিয়ারাপদ থাকা যাবে:
চোখের
সামনেই কত মানুষের জীবন দেখতে পারছি। এদের মধ্যে যারা নিজেদের ক্যারিয়ারের
একটা গতি করে ফেলতে পেরেছে তাদের জীবন কাটছে "বাসা টু অফিস, অফিস টু বাসা"
'র মধ্যে। মাঝে মাঝে বন্ধের দিনে বউ-বাচ্চাসহ ঘুরতে যাওয়া, সুন্দর সুন্দর
সেলফী আপলোড দেওয়া, মনে কী অনুভূতি খেলছে তা ফেসবুকে পোস্টানো, ইত্যাদি
হাবিজাবি। তাদের বাকী জীবনও এভাবে কাটবে। যদি একটু অবসর মিলে তাহলে তারা যা
চিন্তাভাবনা করে তার সবটুকু জুড়ে থাকে কিভাবে আরো ভালো অবস্থানে যাওয়া
যায়। দেশ, সমাজ, রাজনীতি, ইসলাম, উম্মাহর সমস্যা এইসবের সাথে তাদের দূরতম
কোন সম্পর্ক নেই।
আরেকদল আছে যারা তাদের মত এখনো সেটেল হতে পারে নাই। কিন্তু তারা প্রাণান্তকর চেষ্টা করছে সেটেল হওয়ার জন্য। এরা যদি সেটেল হতে পারে তাহলে তাদের জীবনও কাটবে যারা সেটেল হয়েছে তাদের মত করে।
একটু চিন্তাশীল ও ভাবুক এমন ক্যাটাগরির মানুষ যে নাই তা না। তবে জীবনের মৌলিক সমস্যাগুলো এবং দেশ ও ধর্ম নিয়ে এদের কোন মাথা ব্যথা নেই। এদের সমস্ত অস্তিত্বজুড়ে আছে ফুল, পাখি, নদী, প্রেম, ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখের কিচ্ছা এইসব। নিজের মনের আবেগ-অনুভূতিটাকে যদি এরা গল্প কিংবা কবিতা দিয়ে ভালোমত ফুটিয়ে তুলতে পারে তাহলে এটাকেই তারা চরম স্বার্থক মনে করে। কোনদিন সীমান্তে বিএসএফের হত্যার প্রতিবাদ করবে না। রোহিঙ্গাদের আর্তনাদ এদের কানে পৌঁছাবে না। দেশে সুশাসন, বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার এইসব থাকা না থাকা দিয়েও তাদের কিছু যায় আসে না।
এইসব ঘৃণ্য জীবন থেকে আমি চিরকালই পানাহ চেয়ে এসেছি। আমার মেধা, আমার তারুণ্য, আমার সময়, আমার শক্তি যদি ইসলাম, দেশ, উম্মাহ সর্বোপরি মানবতার কাজে না লাগে তাহলে নিঃসন্দেহে আমার এ জীবন ব্যর্থ। আমি যখন আমার ব্যাংক ব্যালেন্স উন্নত করার চিন্তা করছি তখন আমারই মত কোন এক রোহিঙ্গা পরের বেলার ভাত যোগাড়ের চিন্তা করছে। আমি যখন নিরাপদ ও স্বচ্ছল ভবিষতের স্বপ্ন দেখছি তখন ইরাক-সিরিয়া-আফগান-গাজার লোকেরা হয়তো বিমান হামলা থেকে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আমার চোখের সামনেই আমার মাতৃভূমির স্বাধীনতা বিশেষ দেশ দালালদের মাধ্যমে কব্জা করে নিচ্ছে। তবু আমি যদি আমাকে নিয়েই ব্যস্ত থাকি, আমাকে নিয়েই স্বপ্ন দেখি, আমার জন্যই সর্বশক্তি ব্যয় করি তাহলে কসম খেয়ে বলতি পারি আমিই এই পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব।
← ← ← ← ←←←← written by Javed Imran
written by me (Peyar Ahamed Rubel)→→ →→ → → → →
ফেসবুকের ভয়- আপনাদের অনেকের ধারণা সরকারের দূর্নীতি, অনিয়ম, জুলুম, অত্যাচার এসবের বিরুদ্ধে লিখলে পুলিশ আপনাকে ধরে নিয়ে যাবে! এই ধারণা সরকারী দলের মালিকানাধীন মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। যার কারণে আপনারা লিখতে চেয়েও লিখতে পারছেন না। মাঝে-মধ্যে কিছু লোককে পুলিশ ধরে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। যেন আইএস ধরেছে! আপনাদের জেনে রাখা দরকার পুলিশ আসলে কাদের ধরে- প্রথমে টার্গেটে থাকে বড় বড় পেইজের এডমিনরা যারা সরকারের বিরোধীতা করে বা মানুষকে উস্কে দিতে চায়/ যাদের উস্কানী বিশাল একটা সংখ্যার মধ্যে প্রভাব ফেলে।
আবার অনেক সময় দেখা যায় পার্সোনাল একাউন্ট ব্যবহারকারীদের ধরে নিয়ে যায়। যাদের ফ্রেন্ডলিস্টে উল্লেখ করার মতো লোকও নেই/৫০০/৮০০ মতো ফ্রেন্ড। তার কারণ এসবে পার্সোনাল একাউন্টে পরিচিত আওয়ামীলীগের বড় ভাই টাইপের কেউ থাকে। যারা বীপরিত মতের লোকদের নিজেদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে পুলিশি হয়রানি করে থাকে। পরিচিত কেউ না থাকলে আপনাকে সহজে ধরতে পারবে না। কারণ বড় বড় পেইজের এডমিনদের ধরার জন্য পুলিশের অনেক বেগ পেতে হয়। আর পার্সোনাল একাউন্ট ব্যবহারকারীর জন্য এতো পরিশ্রম পুলিশের মতো অলস জাতি করবে না। ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের তথ্য দেয় না। গত বার ফেসবুক বন্ধ করার আগে কয়েকটি পেইজের এডমিনদের পরিচয় জানতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়ে ছিল সরকার। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তথ্য না দেওয়ায় সরকার ফেসবুক বন্ধ করে দেয়। পরে সচেতন নাগরিকদের বিরোধীতা/ফেসবুকের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে সরকার কিছুদিন বাদে ফেসবুক পুনরায় চালু করতে বাধ্য হয়।
• কিভাবে লিখলে/ফেসবুক ব্যবহার করলে ধরা খাবেন না: আপনি যদি নিজের ছবি/নিজের আসল পরিচয় দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করেন। বা ভিন্ন মতের কারণে কারো সাথে আপনার বন্ধুত্ব নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে আপনি স্বাভাবিকভাবে লিখে যান। আর যদি মনে করেন বিপরীত কিছু ঘটবে তাহলে আপনি পরিচয় গোপন রেখে আপনার পরিচিতদের পরিবর্তনের জন্য লিখে যান। আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে সমমনার লোকদের রাখবেন না অর্থ্যাত আপনি যদি বিএনপি হোন তাহলে বিএনপির ছেলেদের রাখবেন না। তবে ভারসাম্য রক্ষার জন্য ফ্রেন্ড সংখ্যা অনুযায়ী কিছু লোক রাখতে পারেন, ১০০/২৫ রাখুন। আপনার যদি বেশি ভয় থাকে তাহলে সরকারের অনিয়ম/দূর্নীতির বিষয়ে যেসব নিউজ পত্রিকাতে আসে সেসব কপি করে পোস্ট করুন। এতে লেখায় খারাপ কিছু থাকলেও আপনি দায়ী থাকবেন না/ আপনাকে ধরবে না। যেহেতু পত্রিকাগুলোকে কিছু বলছে না সেখানে আপনাকে হয়রানী করতে যাবে কেন? বেশির ভাগ সরকারী দলের মালিকাধীন পত্রিকার নিউজ কপি করবেন। এতে করে সবার কাছে গ্রহনযোগ্যতা পাবে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগদের কাছে। আর একটা কথা সেটা হলো অযথা রাগের বশবর্তী হয়ে উল্টা-পাল্টা লিখবেন না। যা বাস্তবে পারবেন না তা মুখে বলবেন না। অনেকে হাসিনার মৃত্যু কামনা করে স্ট্যাটাস দিয়ে এখনো জেলে আছে। কিন্তু হাসিনা মৃত্যু হয় নাই, যারা মৃত্যু কামনা করেছে তারা বেঁচে থেকেও মরে গেছে। কিছুদিন আগে Hasn Ruhani নামে ফেইক আইডি থেকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হত্যার হুমকি দিয়ে পত্রিকায় এক যুবক কমেন্ট করে। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। জানা যায় ছেলেটি হিন্দু। আমি আপনাদের কোন এক পোস্টে একবার বলেছিলাম, ‘কিছু ফেইক আইডি রয়েছে যারা বাংলাদেশের পত্রিকায় এসে শিয়া-সুন্নী দ্বন্ধ লাগিয়ে দেয়, আবার ভারতীয় বাংলা পত্রিকায় গিয়ে বাংলাদেশী-এবং বাঙ্গালীদের (হিন্দু) মধ্যে ঝগড়া লাগিয়ে দেয়।‘ ঠিক তার কিছুদিন বাদেই হাসান রুহানি নামে (হিন্দু) ছেলেটি গ্রেপ্তার হয়।
• ফেসবুকের প্রতি যদি আস্থা না থাকে: আপনি যদি মনে করেন ফেসবুক আপনার পরিচয় সরকারের কাছে ফাঁস করে দিতে পারে তাহলে আপনি প্রক্সি সাইট/ আইপি হাইড করে ফেসবুক ব্যবহার করুন।
-প্রক্সিসাইট- proxysite.com/facebook/ ফেসবুক মোবাইল নাম্বার চাইলে দিবেন না, মেইল দিয়ে ফেইসবুক ব্যবহার করবেন। যদি একান্তই ফোন নাম্বার দিতে হয় তাহলে ভুয়া রেজিষ্টেশঙ্কৃত নাম্বার দিন যেটা আপনার পরিচিতরাও জানে না। তবে এই প্রক্সিসাইট ব্যবহার করে মজা পাবেন না। কারণ এটা ফেসবুকের m.facebook.com ব্যবহার করতে দিবে যা অত্যন্ত বিরক্তিকর।
-IP Hider Pro - iphiderpro.com থেকে ডলার দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। যদি ফ্রি পেতে চান তাহলে আশেপাশে কোন কম্পিউটার এক্সপার্টদের কাছে/গুগলে ফ্রী ভার্সন পেয়ে যেতে পারেন। তবে সফটওয়্যার টি আপনাকে ক্রেক করে নিতে হবে। ক্রেক করে কিভাবে ইউটিউবে দেখে নিন। IP Hider কম্পিউটার ইউজারদের জন্য। মোবাইল ইউজারদের জন্য প্লেস্টোরে VPN নামে সফটওয়্যার রয়েছে। VPN/IP Hider সফটওয়্যার প্রক্সি সাইটের মত নয় এরা শুধু আপনাকে আইপি চেইঞ্জ করে দিব বাকি সব আগের মতই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে সবসময় একই দেশের আইপি ব্যবহার করবেন। নাহয় ঘন ঘন আইপি চেইঞ্জ করার কারণে ফেসবুক আপনার একাউন্ট স্থগিত/বন্ধ করে দিবে।
*এসব নিরাপত্তার কোনটিই আমি ব্যবহার করিনা/প্রয়োজন হয়না। আপনাদের প্রয়োজন হলে ব্যবহার করতে পারেন।
• কি লিখবেন/কিভাবে লিখবেন: রাজনৈতিক, আন্তির্জাতিক, ধর্মীয়, বিনোদন ইত্যাদি যে কোন বিষয়ে। তবে দেশের পরিস্থিতির সাথে মিল রেখে লিখবেন। সব সময় একই বিষয়ের উপর লিখবেন না। বিভিন্ন বিশয়ের উপর লিখুন। লেখালেখি আপনার পরিচিতদের মধ্যে আপনার ব্যাক্তিত্বের প্রকাশ ঘটাবে এবং সম্মানিত করবে। এমনকি কপি করা লেখা হলেও। কপি করা লেখা আপনার রুচিবোধের পরিচয় দিবে।
• শেয়ার নয়- ছবি শেয়ার করবেন কিন্তু লেখা শেয়ার করবেন না। লেখা শেয়ার করলে ঝাপসা হয়ে যায়। আর শেয়ারকৃত লেখা কেউ পড়তে চায় না/নজরে পড়েনা/এড়িয়ে যায়। তবে আমি পত্রিকার নিউজ ব্যাতীত সকল ধরনের শেয়ারের বিপক্ষে।
• কপি করুন: যাদের লেখালেখির সময় নেই/সময় করতে পারেন না তারা ইচ্ছেমত কপি করুন। ভালো মানের লেখা হতে হবে। বানানের দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখবেন। সময় থাকলে সাধ্যমত কপি করা লিখা শুদ্ধ করে দিবেন।
• ভালো মানের ছবি: সব সময় ভালোমানের ছবি শেয়ার করবেন। ঘন ঘন নিজের ব্যাক্তিগত ছবি আপলোড করে বন্ধুদের বিরক্তির কারণ হবেন না।
• চ্যাটিং: মেয়েদের সাথে ফেসবুকে প্রেম করবেন না। এটা হচ্ছে চরম ধোকাবাজির জায়গা। ইনবক্স এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। অপরিচিতদের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করবেন না। জাতীয়/আন্তর্জাতিক/রাজনৈতিক/ইসলামের বাহিরে ব্যাক্তিগত কোন আলোচনা করবেন না। অযথা চ্যাটিংয়ে সময় না দিয়ে পোস্ট পড়ুন এবং পোস্ট করুন। চ্যাটিং অপ রাখুন।
• নিরপেক্ষতা বজায় রাখুন: যথেষ্ট নিরপেক্ষতা বজায় রাখার চেষ্টা করবেন।
• ধৈর্য: সত্য প্রকাশ করতে গেলে ধৈর্য ধারণ করতে হয়। ভিন্নমতের কাউকে গালাগালি করবেন না তাহলে আপনার লেখার গ্রহনযোগ্যতা হারাবেন এবং আপনার ব্যাক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
• যারা বলে ফেসবুকে লিখে কোন লাভ নেই তাদের থেকে দূরে থাকুন। মিডিয়াগুলো যখন সরকারী নিয়ম নীতির এবং নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে বন্ধি তখন নিজের টাইমলাইনকে শক্তিশালী মিডিয়া হিসেবে গ্রহন করুণ। ফেসবুকের প্রতিবাদ যে কি করতে পারে তা আমরা রাজন হত্যা থেকে শুরু করে ইন্ডিয়ান হাইকমিশনের পেইজ থেকে প্রণবের ছবি সরানো পর্যন্ত দেখেছি।
যারা যারা কী-বোর্ড যুদ্ধা হতে চান সাড়া দিন, সাধ্য মত হেল্প করব।
আরেকদল আছে যারা তাদের মত এখনো সেটেল হতে পারে নাই। কিন্তু তারা প্রাণান্তকর চেষ্টা করছে সেটেল হওয়ার জন্য। এরা যদি সেটেল হতে পারে তাহলে তাদের জীবনও কাটবে যারা সেটেল হয়েছে তাদের মত করে।
একটু চিন্তাশীল ও ভাবুক এমন ক্যাটাগরির মানুষ যে নাই তা না। তবে জীবনের মৌলিক সমস্যাগুলো এবং দেশ ও ধর্ম নিয়ে এদের কোন মাথা ব্যথা নেই। এদের সমস্ত অস্তিত্বজুড়ে আছে ফুল, পাখি, নদী, প্রেম, ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখের কিচ্ছা এইসব। নিজের মনের আবেগ-অনুভূতিটাকে যদি এরা গল্প কিংবা কবিতা দিয়ে ভালোমত ফুটিয়ে তুলতে পারে তাহলে এটাকেই তারা চরম স্বার্থক মনে করে। কোনদিন সীমান্তে বিএসএফের হত্যার প্রতিবাদ করবে না। রোহিঙ্গাদের আর্তনাদ এদের কানে পৌঁছাবে না। দেশে সুশাসন, বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার এইসব থাকা না থাকা দিয়েও তাদের কিছু যায় আসে না।
এইসব ঘৃণ্য জীবন থেকে আমি চিরকালই পানাহ চেয়ে এসেছি। আমার মেধা, আমার তারুণ্য, আমার সময়, আমার শক্তি যদি ইসলাম, দেশ, উম্মাহ সর্বোপরি মানবতার কাজে না লাগে তাহলে নিঃসন্দেহে আমার এ জীবন ব্যর্থ। আমি যখন আমার ব্যাংক ব্যালেন্স উন্নত করার চিন্তা করছি তখন আমারই মত কোন এক রোহিঙ্গা পরের বেলার ভাত যোগাড়ের চিন্তা করছে। আমি যখন নিরাপদ ও স্বচ্ছল ভবিষতের স্বপ্ন দেখছি তখন ইরাক-সিরিয়া-আফগান-গাজার লোকেরা হয়তো বিমান হামলা থেকে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আমার চোখের সামনেই আমার মাতৃভূমির স্বাধীনতা বিশেষ দেশ দালালদের মাধ্যমে কব্জা করে নিচ্ছে। তবু আমি যদি আমাকে নিয়েই ব্যস্ত থাকি, আমাকে নিয়েই স্বপ্ন দেখি, আমার জন্যই সর্বশক্তি ব্যয় করি তাহলে কসম খেয়ে বলতি পারি আমিই এই পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব।
← ← ← ← ←←←← written by Javed Imran
written by me (Peyar Ahamed Rubel)→→ →→ → → → →
ফেসবুকের ভয়- আপনাদের অনেকের ধারণা সরকারের দূর্নীতি, অনিয়ম, জুলুম, অত্যাচার এসবের বিরুদ্ধে লিখলে পুলিশ আপনাকে ধরে নিয়ে যাবে! এই ধারণা সরকারী দলের মালিকানাধীন মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। যার কারণে আপনারা লিখতে চেয়েও লিখতে পারছেন না। মাঝে-মধ্যে কিছু লোককে পুলিশ ধরে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। যেন আইএস ধরেছে! আপনাদের জেনে রাখা দরকার পুলিশ আসলে কাদের ধরে- প্রথমে টার্গেটে থাকে বড় বড় পেইজের এডমিনরা যারা সরকারের বিরোধীতা করে বা মানুষকে উস্কে দিতে চায়/ যাদের উস্কানী বিশাল একটা সংখ্যার মধ্যে প্রভাব ফেলে।
আবার অনেক সময় দেখা যায় পার্সোনাল একাউন্ট ব্যবহারকারীদের ধরে নিয়ে যায়। যাদের ফ্রেন্ডলিস্টে উল্লেখ করার মতো লোকও নেই/৫০০/৮০০ মতো ফ্রেন্ড। তার কারণ এসবে পার্সোনাল একাউন্টে পরিচিত আওয়ামীলীগের বড় ভাই টাইপের কেউ থাকে। যারা বীপরিত মতের লোকদের নিজেদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে পুলিশি হয়রানি করে থাকে। পরিচিত কেউ না থাকলে আপনাকে সহজে ধরতে পারবে না। কারণ বড় বড় পেইজের এডমিনদের ধরার জন্য পুলিশের অনেক বেগ পেতে হয়। আর পার্সোনাল একাউন্ট ব্যবহারকারীর জন্য এতো পরিশ্রম পুলিশের মতো অলস জাতি করবে না। ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের তথ্য দেয় না। গত বার ফেসবুক বন্ধ করার আগে কয়েকটি পেইজের এডমিনদের পরিচয় জানতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়ে ছিল সরকার। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তথ্য না দেওয়ায় সরকার ফেসবুক বন্ধ করে দেয়। পরে সচেতন নাগরিকদের বিরোধীতা/ফেসবুকের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে সরকার কিছুদিন বাদে ফেসবুক পুনরায় চালু করতে বাধ্য হয়।
• কিভাবে লিখলে/ফেসবুক ব্যবহার করলে ধরা খাবেন না: আপনি যদি নিজের ছবি/নিজের আসল পরিচয় দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করেন। বা ভিন্ন মতের কারণে কারো সাথে আপনার বন্ধুত্ব নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে আপনি স্বাভাবিকভাবে লিখে যান। আর যদি মনে করেন বিপরীত কিছু ঘটবে তাহলে আপনি পরিচয় গোপন রেখে আপনার পরিচিতদের পরিবর্তনের জন্য লিখে যান। আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে সমমনার লোকদের রাখবেন না অর্থ্যাত আপনি যদি বিএনপি হোন তাহলে বিএনপির ছেলেদের রাখবেন না। তবে ভারসাম্য রক্ষার জন্য ফ্রেন্ড সংখ্যা অনুযায়ী কিছু লোক রাখতে পারেন, ১০০/২৫ রাখুন। আপনার যদি বেশি ভয় থাকে তাহলে সরকারের অনিয়ম/দূর্নীতির বিষয়ে যেসব নিউজ পত্রিকাতে আসে সেসব কপি করে পোস্ট করুন। এতে লেখায় খারাপ কিছু থাকলেও আপনি দায়ী থাকবেন না/ আপনাকে ধরবে না। যেহেতু পত্রিকাগুলোকে কিছু বলছে না সেখানে আপনাকে হয়রানী করতে যাবে কেন? বেশির ভাগ সরকারী দলের মালিকাধীন পত্রিকার নিউজ কপি করবেন। এতে করে সবার কাছে গ্রহনযোগ্যতা পাবে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগদের কাছে। আর একটা কথা সেটা হলো অযথা রাগের বশবর্তী হয়ে উল্টা-পাল্টা লিখবেন না। যা বাস্তবে পারবেন না তা মুখে বলবেন না। অনেকে হাসিনার মৃত্যু কামনা করে স্ট্যাটাস দিয়ে এখনো জেলে আছে। কিন্তু হাসিনা মৃত্যু হয় নাই, যারা মৃত্যু কামনা করেছে তারা বেঁচে থেকেও মরে গেছে। কিছুদিন আগে Hasn Ruhani নামে ফেইক আইডি থেকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হত্যার হুমকি দিয়ে পত্রিকায় এক যুবক কমেন্ট করে। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। জানা যায় ছেলেটি হিন্দু। আমি আপনাদের কোন এক পোস্টে একবার বলেছিলাম, ‘কিছু ফেইক আইডি রয়েছে যারা বাংলাদেশের পত্রিকায় এসে শিয়া-সুন্নী দ্বন্ধ লাগিয়ে দেয়, আবার ভারতীয় বাংলা পত্রিকায় গিয়ে বাংলাদেশী-এবং বাঙ্গালীদের (হিন্দু) মধ্যে ঝগড়া লাগিয়ে দেয়।‘ ঠিক তার কিছুদিন বাদেই হাসান রুহানি নামে (হিন্দু) ছেলেটি গ্রেপ্তার হয়।
• ফেসবুকের প্রতি যদি আস্থা না থাকে: আপনি যদি মনে করেন ফেসবুক আপনার পরিচয় সরকারের কাছে ফাঁস করে দিতে পারে তাহলে আপনি প্রক্সি সাইট/ আইপি হাইড করে ফেসবুক ব্যবহার করুন।
-প্রক্সিসাইট- proxysite.com/facebook/ ফেসবুক মোবাইল নাম্বার চাইলে দিবেন না, মেইল দিয়ে ফেইসবুক ব্যবহার করবেন। যদি একান্তই ফোন নাম্বার দিতে হয় তাহলে ভুয়া রেজিষ্টেশঙ্কৃত নাম্বার দিন যেটা আপনার পরিচিতরাও জানে না। তবে এই প্রক্সিসাইট ব্যবহার করে মজা পাবেন না। কারণ এটা ফেসবুকের m.facebook.com ব্যবহার করতে দিবে যা অত্যন্ত বিরক্তিকর।
-IP Hider Pro - iphiderpro.com থেকে ডলার দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। যদি ফ্রি পেতে চান তাহলে আশেপাশে কোন কম্পিউটার এক্সপার্টদের কাছে/গুগলে ফ্রী ভার্সন পেয়ে যেতে পারেন। তবে সফটওয়্যার টি আপনাকে ক্রেক করে নিতে হবে। ক্রেক করে কিভাবে ইউটিউবে দেখে নিন। IP Hider কম্পিউটার ইউজারদের জন্য। মোবাইল ইউজারদের জন্য প্লেস্টোরে VPN নামে সফটওয়্যার রয়েছে। VPN/IP Hider সফটওয়্যার প্রক্সি সাইটের মত নয় এরা শুধু আপনাকে আইপি চেইঞ্জ করে দিব বাকি সব আগের মতই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে সবসময় একই দেশের আইপি ব্যবহার করবেন। নাহয় ঘন ঘন আইপি চেইঞ্জ করার কারণে ফেসবুক আপনার একাউন্ট স্থগিত/বন্ধ করে দিবে।
*এসব নিরাপত্তার কোনটিই আমি ব্যবহার করিনা/প্রয়োজন হয়না। আপনাদের প্রয়োজন হলে ব্যবহার করতে পারেন।
• কি লিখবেন/কিভাবে লিখবেন: রাজনৈতিক, আন্তির্জাতিক, ধর্মীয়, বিনোদন ইত্যাদি যে কোন বিষয়ে। তবে দেশের পরিস্থিতির সাথে মিল রেখে লিখবেন। সব সময় একই বিষয়ের উপর লিখবেন না। বিভিন্ন বিশয়ের উপর লিখুন। লেখালেখি আপনার পরিচিতদের মধ্যে আপনার ব্যাক্তিত্বের প্রকাশ ঘটাবে এবং সম্মানিত করবে। এমনকি কপি করা লেখা হলেও। কপি করা লেখা আপনার রুচিবোধের পরিচয় দিবে।
• শেয়ার নয়- ছবি শেয়ার করবেন কিন্তু লেখা শেয়ার করবেন না। লেখা শেয়ার করলে ঝাপসা হয়ে যায়। আর শেয়ারকৃত লেখা কেউ পড়তে চায় না/নজরে পড়েনা/এড়িয়ে যায়। তবে আমি পত্রিকার নিউজ ব্যাতীত সকল ধরনের শেয়ারের বিপক্ষে।
• কপি করুন: যাদের লেখালেখির সময় নেই/সময় করতে পারেন না তারা ইচ্ছেমত কপি করুন। ভালো মানের লেখা হতে হবে। বানানের দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখবেন। সময় থাকলে সাধ্যমত কপি করা লিখা শুদ্ধ করে দিবেন।
• ভালো মানের ছবি: সব সময় ভালোমানের ছবি শেয়ার করবেন। ঘন ঘন নিজের ব্যাক্তিগত ছবি আপলোড করে বন্ধুদের বিরক্তির কারণ হবেন না।
• চ্যাটিং: মেয়েদের সাথে ফেসবুকে প্রেম করবেন না। এটা হচ্ছে চরম ধোকাবাজির জায়গা। ইনবক্স এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। অপরিচিতদের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করবেন না। জাতীয়/আন্তর্জাতিক/রাজনৈতিক/ইসলামের বাহিরে ব্যাক্তিগত কোন আলোচনা করবেন না। অযথা চ্যাটিংয়ে সময় না দিয়ে পোস্ট পড়ুন এবং পোস্ট করুন। চ্যাটিং অপ রাখুন।
• নিরপেক্ষতা বজায় রাখুন: যথেষ্ট নিরপেক্ষতা বজায় রাখার চেষ্টা করবেন।
• ধৈর্য: সত্য প্রকাশ করতে গেলে ধৈর্য ধারণ করতে হয়। ভিন্নমতের কাউকে গালাগালি করবেন না তাহলে আপনার লেখার গ্রহনযোগ্যতা হারাবেন এবং আপনার ব্যাক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
• যারা বলে ফেসবুকে লিখে কোন লাভ নেই তাদের থেকে দূরে থাকুন। মিডিয়াগুলো যখন সরকারী নিয়ম নীতির এবং নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে বন্ধি তখন নিজের টাইমলাইনকে শক্তিশালী মিডিয়া হিসেবে গ্রহন করুণ। ফেসবুকের প্রতিবাদ যে কি করতে পারে তা আমরা রাজন হত্যা থেকে শুরু করে ইন্ডিয়ান হাইকমিশনের পেইজ থেকে প্রণবের ছবি সরানো পর্যন্ত দেখেছি।
যারা যারা কী-বোর্ড যুদ্ধা হতে চান সাড়া দিন, সাধ্য মত হেল্প করব।