খিলাফতের পতনে আমরা কী হারালাম



১৯২৪ সালের ৩ মার্চ পতন হয়েছে উসমানি খিলাফতের। সদ্য অতিবাহিত হয়ে গেল খিলাফত পতনের পূর্ণ নব্বই বছর।

আসুন, দেখি ! এই নব্বই বছরে আমরা কী কী হারালাম ?

(মুসলিম বিশ্বে চালানো গণহত্যার ইতিহাস নির্ভর পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে নিম্নোক্ত তথ্যাদি প্রদান করা হল)

– ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন দখল করল সন্ত্রাসী ইহুদীরা। এতে এ যাবত আনুমানিক শহীদ হয়েছেন, ১৯ লক্ষ মুসলমান। উদ্ধাস্তু হয়েছেন প্রায়৫০ লক্ষ মুসলমান।

– ১৯৪৭ সালে যখন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হয় তখন নিহত

হয়েছিলেন প্রায় ১ কোটি মুসলমান।

– ইটালী লিবিয়া আক্রমণের সময় শহীদ হন প্রায় ৫ লক্ষ মুসলমান ।

– ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ জন্মের সময় নিহত হোন (কথিত) আরো ৩০ লক্ষ মুসলমান, (সত্য-মিথ্যা আল্লাহ ভালো জানেন, নির্ভরযোগ্যসুত্রে যদি কেউ নিশ্চিত সংখ্যা জানান, তাহলে সংশোধন করার অবকাশ আছে) ।

– চেচনিয়ায় এ যাবত শহীদ ৫ লক্ষ।

-বসনিয়ায় ১০ লক্ষ।

– বার্মায় ১৫ লক্ষ।

-আফগানিস্তানে রাশিয়া-আমেরিকা মিলে ২৫ লক্ষ।

– ইরাকে ইরান- আমেরিকার সাথেকয়েকবারের লড়াইয়ে নিহতের সংখ্যা ১৫ লক্ষ।

– জিংজিয়াংয়ে ১৫ লক্ষ।

– ফিলিপাইনে ৫ লক্ষ।

– আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ৩০ লক্ষ।

-কাশ্মীরে ৫ লক্ষ।

– ভারতে ১০ লক্ষ।

– বুলগেরিয়া, কসাভো, আলবেনিয়া সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আরো১০ লক্ষ।

– সিরিয়ায় বাশারের বাপ হাফিজের আমল থেকে এখন পর্যন্ত ৩ লক্ষ ।

– তাছাড়া ইয়েমেন, লেবানন, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তানসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশে আরো ১০ লক্ষ

তাহলে বুঝা গেলো খিলাফত পতনের পর ৯০ বছরে মুসলমানদের নিহতের সংখ্যা হলো প্রায় আড়াই কোটি, উদ্ধাস্তু আনুমানিক ৫০ কোটি। হারানো মুসলিম ভূ-খন্ড হলো ফিলিস্তিন, পুর্বতুর্কিস্তান (জিংজিয়াং), মিন্দানাও, দক্ষিণ সুদান, পুর্ব-তিমুরসহ আরো অনেকভূমি।

আসুন, এবার দেখি খিলাফত থাকাকালে আমাদের অবস্থা কী ছিল?
জেনে রাখা প্রয়োজন যে, নবীজীর ইন্তেকালের পর ধারাবাহিকভাবে প্রায় সোয়া তেরশ বছর পর্যন্ত খিলাফত ছিল । মধ্যখানে একবারতাতারীরা যখন বাগদাদে অবস্থিত আব্বাসি খিলাফত ধ্বংস করেছিল তখন ১২৫৮ – ৬১পর্যন্ত মুসলমানদের কোনো খলীফা ছিলেন না।

এই সাড়ে তেরশ বছরে মুসলমানদের যেসব রক্তপাত হয়েছিল তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ-

খেলাফতে রাশেদার আমলে এবং উমাইয়া আমলে বিভিন্ন লড়াইয়ে অনুমানিক দেড় লক্ষ। ক্রুসেডাররা বায়তুল মুকাদ্দস দখলের সময় ১ লক্ষ এবং পরবর্তী লড়াইয়ে আরো ২ লক্ষ। তাতারী সয়লাবে বোখারা, সমরকন্দ, শীরাজ, বাগদাদ এবং দামেস্কে অনুমানিক ৫০লক্ষ। স্পেনে ২০ লক্ষ। আরো বিভিন্ন লড়াইয়ে অনুমানিক আরো ৫০ লক্ষ। তাহলে বুঝা গেলো খিলাফত থাকাকালে সোয়া তেরশ বছরে মুসলমানদের নিহতের সংখ্যা হচ্ছে প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ।

ভু-খন্ড হারিয়েছি স্পেন। আবার ইসলামের ছায়াতলে এসেছে স্পেন এবং ইউরোপের দানিয়ুব নদী পর্যন্ত এবং বর্তমান মুসলিমবিশ্ব।

আর খিলাফতছাড়া মাত্র ৯০ বছরে আমাদের নিহতের সংখ্যা হলো আড়াইকোটি। বিজয় করেছিশূন্য (০) ভুমি। হারিয়েছি অসংখ্য মুসলিম ভূ-খন্ড।

তাই আমাদের উচিত, একবার আমেরিকা, আরেকবার রাশিয়া, অন্যবার চীনের উপর নির্ভর না করে অতি তাড়াতাড়ি খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা। কারণ নবীজী(সাঃ) বলেছেন,

” খিলাফত আবার আসবে নবুওতের আদলে ! “(মুসনাদে আহমদ , মিশকাত)

নতুবা আমাদের নিহতের সংখ্যা এবং হারানো ভু-খন্ডের তালিকা বাড়তেই থাকবে।

এবার বুঝতে পারছেন তো খিলাফতের পতনে আমরা কী কী হারালাম।

এটা ইতিহাস অধ্যয়নের পর আমার আনুমানিক হিসাব, তাই কোনো বইয়ের সুত্র দিতে পারব না। শুধু এতটুকু বলবো, আপনারা ইতিহাস পড়ুন, তাহলে বুঝতে পারবেন, আমার পরিসংখ্যান কতটুকু সঠিক।

#মুসলিম দেশে কাদের #সেনাবাহিনী …?

মানচিত্র হাতে নিলে ৫৭ টি মুসলিম দেশের পতাকা নজরে পড়ে। যদি প্রতিটি দেশের সামরিক আধা-সামরিক বাহিনীর সংখ্যা গড়ে এক লাখ করে হয়। তাহলে ৫৭ টি দেশের সামরিক বাহিনীর সংখ্যা ৫৭ লাখ। আর যদি এই সব সেনাসদস্যকে একবার এককাতারে সারিবদ্ধ করা হয় তাহলে?

তাহলে এভাবে হচ্ছে না কেনো অথচ বাংলাদেশ এবং হাতে গোনা দু/এক দেশ ছাড়া বাকী সব মুসলিমদেশের সীমান্ত পরষ্পরের সাথে মিলিত।

এর অনেক কাহিনী আছে। এগুলো বুঝতে হলে আমাদেরকে একটু পিছনে ফিরে যেতে হবে। আমরা বেশিদুর যাব না, আমরা শুধু আমাদের এই উপমহাদেশেই থাকব।

দেখুন , একসময় এই উপমহাদেশ ব্রিটিশের কলোনী ছিলো। যখন তারা এদেশকে উপনিবেশ বানালো তখন তারা সর্বপ্রথম দুটি কাজ করল।

• এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা তাদের মতো করে গড়ে নিলো

• এদেশের মানুষ দিয়ে তাদের মতো করে প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী গড়ে তুলল।

এ দুটি ছাড়াও তারা এদেশের বিচারব্যবস্থায় তাদের মতো করে মৌলিক পরিবর্তন আনল। এই তথাকথিত শিক্ষিত স্যার সৈয়দ আহমদকে দিয়েই ১৮৫৭ সালে আযাদী আন্দোলনের বিরুদ্ধে মানুষকে বুঝালো। আর তাদের হাতে গড়া সেনাবাহিনী দিয়ে সিপাহীবিদ্রোহ দমালো। এসব একা যে ব্রিটিশ করেছে তা নয়, বরং তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলো দেশীয় বিরাট সংখ্যক সেনাবাহিনী। এভাবে ১৮৫৭ সালের ফুসে উঠা আন্দোলন কিছুক্ষণ জ্বলার পর দপ দপ করে নিভে গেলো।

পরবর্তীতে ১ম বিশ্বযুদ্ধে এ উপমহাদেশ থেকে ১২ লক্ষ সেনাবাহিনী নিয়ে দাড় করালে উসমানি খেলাফতের বিরুদ্ধে, এই দেশীয় সেনাবাহিনীই ইংরেজদের হয়ে ফিলিস্তিনকে দখল করে ইয়াহুদীর হাতে তুলে দিল।

আর ইংরেজরা যখন এদেশ থেকে চলে যায় তখন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সামরিক ব্যবস্থা তাদের মতো করে রেখে যায়। আজ অবধি ইংরেজদের গৃহীত সিলেবাস আমাদের জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমুহে কোনো রকমের মৌলিক পরিবর্তন ছাড়াই পড়ানো হচ্ছে । এবং তাদের হাতে গড়া সেনাবাহিনী বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের ব্যারাকে শোভা পাচ্ছে! তাহলে বলুনতো , যাদের অতীত কেটেছে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর রক্ত চুষে। তারা কীভাবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা করবে?

দেখাতে পারবেন, আধুনিক মুসলিম বিশ্বের ১ লক্ষ সেনা ইসলামের জন্যে শহীদ হয়েছে? যতগুলো সেনা মরেছে তাদের সব মরেছে দেশরক্ষার নামে সাম্রাজ্যবাদীদের দালালিতে। তাদের হাতে বিদেশি কাফির শত্রু ততোটুকু মারা যায়নি যতটুকু শহীদ হয়েছে নিজ দেশের নিরপরাধ নিরস্ত্র জনগণ। তারা সীমান্তের ভীরু আর কালো রাতে গণহত্যার বীর।

কলোনী যে শুধু এই উপমহাদেশে ছিলো তা নয়। বরং আফ্রিকা এবং সিরিয়া ছিলোফ্রান্সের উপনিবেশ। আমু দরিয়ার ওপার ছিলো রাশিয়ার কলোনী। ইন্দোনেশিয়া,মালয়শিয়া ছিলো হলান্ডের কলোনী। লিবিয়া ছিলো ইটালীর কলোনী।

মোটকথা উসমানি খেলাফতের পতনকাল থেকে শুরু করে প্রায় ষাটের দশক পর্যন্তএ কমাত্র আফগানিস্তান ছাড়া প্রায় সব মুসলিমদেশসমূহ প্রত্যক্ষভাবে না হলে ও পরোক্ষভাবে ছিলো সাম্রাজ্যবাদীদের কলোনী। তারা আমাদের মধ্যে তথাকথিত বুদ্ধিজীবী এবং যেসব সেনাবাহিনী রেখে গিয়েছিল তা আজ অবধি বিদ্যমান। যতদিন পর্যন্ত ওদেরকে পুরোপুরি আমূল পরিবর্তন করে আপাদমস্তক নতুনরূপে ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থা এবং ইসলামি সেনাবাহিনীর জন্ম দেওয়া হবে না ততদিন পর্যন্ত কোনো মুসলিম দেশেই প্রকৃতার্থের ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়!

কারণ আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীদের প্রথম দালাল , তাই যখুনি কোনো ইসলামি শক্তির আবির্ভাব ঘটে তখন প্রথমে এই শক্তির মোকাবেলায় এই কুলাঙ্গাররা দাড়িয়ে যায়। তারা মিছিল-সমাবেশ করে জনমতকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চায় । যখন তারা ব্যর্থ হয়ে যায় তখন সেনাবাহিনী এসে গতিরোধ করে। যখন সেনাবাহিনীও হেরে যায় সরাসরি সাম্রাজ্যবাদীরা এসেযায়। যেমনটা ইতিমধ্যে সোমালিয়া, মালি এবং ইয়েমেনে ঘটেছে।

মোটকথা, মুসলিম গণতান্ত্রিক দেশে সেনাবাহিনী হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীদের নিরাপত্তাবাহিনী এবং স্বৈরাচারী ও রাজতান্ত্রিক দেশে হচ্ছে স্বৈরাচার ও রাজপরিবারের রক্ষাকারী। আর ওই স্বৈরাচার ও রাজপরিবার হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীদের সেবক।

এরা নাকি মুসলিম দেশসমুহের সেনাবাহিনী! (?)

এখানে আমরা মুসলিমবিশ্বের তিনটি বৃহত্তম সেনাবাহিনীর কথা আলোচনা করব।

• মিসর:

এ দেশটির সামরিক আধা-সামরিক বাহিনীর সংখ্যা প্রায় দশ লাখ। আরব বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ এটি।

তাদের সেনাবাহিনীর কীর্তি হচ্ছে, পঞ্চাশের দশকে ইখওয়ানের সমর্থন নিয়ে যখনএদেশের সেনাবাহিনী সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশের শাসনভার গ্রহণ করল। তখন তারা কিছুদিন ইখওয়ানি ভাইদের প্রতি সদাচরণ করল। পরে যখন সেনাপতি জামাল আব্দুন-নাসির ক্ষমতায় আসল তখন তারা ইখওয়ানের উপর চরম নির্যাতন শুরু করল। সায়্যিদ কুতুব রাহ. কে শহীদ করল।
জামালের পর আনোয়ার সাদাত এসে ইসরাইলের সাথে মিত্র চুক্তি করল।

তারপর হুসনি মোবারক আসল। একপর্যায়ে(!) ক্ষমতায় আসলেন ডক্টর মুরসি।

তখন এক বছরের মাথায় দেশে দুটি আন্দোলন শুরু হলো।
তাহরীর স্কয়ারে বামপন্থীরা মুরসির পতনের দাবি তুলে।
নাসর সিটি ও রাবেয়ার স্কয়ারে শায়খ হাজিম সালাহ আবু ইসমাঈলের নেতৃত্বে শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার দাবি তুলে।

তখন সেদেশের সেনাবাহিনী কি করল? তাহরীরের মুরতাদদের ডাকে সাড়া দিয়ে রাবেয়াতে গণহত্যা চালালো। তাদের কাছ থেকে তারা যা করেছে এর চেয়ে বেশি আর কী আশা করা যায় ! কারণ এই মিসর ছিলো একসময় ফ্রান্সের কলোনী, তারপর মধ্যখানে কিছু বছর বিরতির পর ছিলো বৃটের কলোনী। আর এখন মিসরি সেনাদেরকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে মার্কিন সেনাবাহিনী। অতএব!

• তুরস্কঃ

বিশ্বের সেরা দশ সেনাবাহিনীর একটি। যার সদস্য সংখ্যা প্রায় সাত লক্ষ!

১৯২৪ সালে উসমানি খিলাফাহের পতন ঘটালো তুর্কি সেনাপ্রধান অভিশপ্ত কামালপাশা। সে খলীফা আব্দুল মজিদ (রাহ). কে দেশান্তরিত করল এবং খলীফার সম্পত্তি ক্রোক করল, আরবিতে আযান বন্ধ করল।

কামাল পাশার পর যখন আদনান মেন্দারিস এসে আযানকে তুর্কি ভাষার পরিবর্তে আরবিভাষায় দেওয়ার বৈধতা দিলেন, তখন সেদেশের সেনাবাহিনী সংবিধান লংঘনের অজুহাত তুলে তাকে চৌরাস্তায় ফাঁসি দিল।

১৯৯৬ সালে যখন নাজমুদ্দিন আরবাকান নির্বাচনে জয়ী হলেন, তখন এই তাগুত সেনাবাহিনী তাকে কারাগারে পাঠায়। এই সেনাবাহিনী ২০০১ সালে ক্রুসেডারদের সহযোগী হয়ে আফগানিস্তানের ইমারাতে ইসলামী ধ্বংসে সাহায্য করে। আজ অবধি এই সেনাবাহিনীর বুলেট নিরীহ নিরপরাধ আফগান শিশুর বুকে বিদ্ধ হচ্ছে।

• পাকিস্তানঃ

বিশ্বের সেরা দশ সেনাবাহিনীর আরেকটি নাম। যার সদস্য সংখ্যা ৬ লক্ষ!

এ সেনাবাহিনী গঠনের ইতিহাস হচ্ছে বৃটিশরা যখন সর্বপ্রথম মাদ্রাজ তামিলনাড্ডু (চেন্নাই) দখল করে। তখন সেখানকার অধিবাসীদের শস্য-ক্ষেত জ্বালিয়েদেয়। তাদের ব্যবসার মুলধন পুড়িয়ে দেয়। তখন মানুষ অনন্যোপায় হয়ে জান বাচানোর তাগিদে কম বেতনে বৃটিশ সেনাবাহিনীতে চাকুরি নেয়। ক্রমান্বয়েসারা দেশে এদের সংখ্যা বাড়তে থাকে!

এই দেশীয় সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বৃটেন টিপু সুলতানকে শহীদ করে। এদের সাহায্যেই তারা সমগ্র ভারতবর্ষ দখল করে। ১৮৫৭ সালে যখন কিছু দেশীয় সিপাহী বিদ্রোহ করে, তখন বৃটেন অন্যান্য দেশীয় সিপাহীদের মাধ্যমে এদেরকে পরাজিত করে। এরাই ৫১ হাজার আলেমকে ফাঁসির কাষ্ঠেঝুলায়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এরাই বৃটেনের হয়ে বায়তুল মুকাদ্দসকে ইয়াহুদীদের হাতে তুলে দেয়।

বৃটিশরা চলে যাবার পর এ সেনাবাহিনী কোনো রকমের মৌলিক পরিবর্তন ছাড়াই আজ অবধি পাকিস্তানের ব্যারাকে শোভা পাচ্ছে-

৭১ সালে এরাই বাংলার ভুমিতে ধর্ষণ-হত্যা-লুটতরাজ চালায়।

তারাই আফগানিস্তানে আগ্রাসনের জন্যে পাকিস্তানের মাটি ক্রুসেডারদের পদতলে নিবেদিত করে।

ডক্টর আফিয়া সিদ্দীকীকে আমেরিকার এরাই হাতে তুলে দেয়।

প্রায় ৮০০ আরব মুজাহিদকে গুয়েন্তানামো বে কারাগারে পাঠায়।

ইমারাতে ইসলামিয়্যাহর দশের উপরের মন্ত্রীকে পাক কারাগারে বন্দী করে!

আর ইদানিংয়ের খবর হচ্ছে যে তাদের প্রহরায় আফগানে ন্যাটোর রসদ সাপ্লাই হচ্ছে।

• আর বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর কথা আর কি বলবো। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় তাদের অভিযানের মাধ্যমে বুঝেছি এই সেনাবাহিনী (র‍্যাব) কাদের স্বার্থ রক্ষা করে চলছে...

দেখান, মুসলিমবিশ্বের অন্তত একটি দেশের সেনাবাহিনী যারা কোনো না কোনোভাবে বিশ্বের কুফরিশক্তির গোলামি করছে না। তাদের কাজ বৃক্ষরোপণ, মাছ চাষ, বন্যার্তদের সাহায্য করা, বিল্ডিং ধসিয়ে পড়লে উদ্ধার কাজ করা এবং জাতিসংঘ নামক মার্কিন সংঘের অধীনে বিভিন্ন দেশে চাকুরী করা। যাদের শৈশব বেড়ে উঠেছে কুফরীশক্তির গোলামি করে। যৌবন পেরিয়েছে তাদের আজ্ঞাবহ হয়ে। তারা কীভাবে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করবে ?

তাই বাংলাদেশি সেনাবাহিনীর প্রতি বিশ্বাস রাখাটাও বোকামী ছাড়া কিচ্ছু হবে না। কারণ সরকার ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী থেকে সব কাটা সরিয়ে ফেলেছে। এবার তাহলে বুঝতে পারছেন, মুসলিমদেশসমুহে এরা কাদের সেনাবাহিনী!

তবে এখন অনেকে বলতে পারেন যে সেনাবাহিনীকে যদি বশে আনা যায় তাহলে তাদের যে কুওয়্যাত(শক্তি-সাম্যর্থ) আছে তা আমরা শরীয়ত তথা খিলাফত প্রতিষ্ঠায় কাজে লাগাতে পারব। কথা ঠিকই আছে তবে এই সেনাবাহিনীকে বশে আনার জন্য বাস্তবসম্মত উপায়ে চেষ্টা করতে হবে যেমনটা করেছেন বিভিন্ন দেশের মুজাহিদীনেরা; আর এ সম্পর্কে শহীদ শায়খ আনোয়ার আল-আওলাকি(রহঃ) বলেনঃ

“সরকারি বাহিনীগুলো ও সামরিক প্রধানরা নুসরাহ দিবে আর আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করবে এমন চিন্তা করা- একটি অলৌকিক ঘটনার জন্য অপেক্ষা করা, শরীয়তে যার কোন অবকাশ নেই। সোজা-কথায় তাদের আলোচনার মাধ্যমে জয় করা যাবে না। তারা শুধুমাত্র তখনই বিজীত হবে যখন তারা দেখবে, এক দল মুমিন তারা যা বলে তাই করে এবং তাদের সমস্ত অর্জন উৎসর্গ করে আল্লাহর রাহে। আর এমনটাই অন্যদেরও অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করবে। এই দ্বীনকে নুসরাহ দেয়া সামরিক ক্ষমতাবান ব্যাক্তিদের দু’টি সফল কাহিনী হল,

* ইরাকি বাথ রেজিমের কিছু প্রাক্তন অফিসাররা যারা বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিল

* দুদাইয়েভ, চেচনিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, যে সোভিয়েত সেনার উচ্চ মর্যাদার অফিসার ছিল।

নুসরাহর এই উভয় সফল উদাহরণ কোন বিতর্ক, বিক্ষোভ ও পুস্তিকার মাধ্যমে অর্জিত হয়নি, বরং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে লিপ্ত মুজাহিদিনদের জীবন্ত উদাহরণ দেখেই অর্জিত হয়েছে।”

তিনি(রহঃ) মুসলিম বিশ্বের সরকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে শরীয়তের হুকুম কি সে সম্পর্কে একটি ফতোয়াও প্রদান করেছেন

মুসলিম বিশ্বের এসব সেনাবাহিনীর প্রতি শরীয়তের হুকুম কি জানতে নিচে শায়খ আনোয়ার আল-আওলাকি রাহ. এর ফতোয়াটি পড়ুন।

যুদ্ধ মুসলিম বিশ্বের সরকারী বাহিনীর বিরুদ্ধেঃ

পৃথিবীতে বিদ্যমান প্রত্যেকটি বাহিনীর একমাত্র উদ্দেশ্য জনগনকে তাদের শত্রু বাহিনী থেকে রক্ষা করা।কিন্তু মুসলিম বিশ্বের বিদ্যমান বাহিনীগুলোর একমাত্র উদ্দেশ্য মুসলিমদের শত্রুদের স্বার্থগুলোকে রক্ষা করা! এটি আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি বক্রাঘাতমূলক অবস্থা! এই বাহিনীগুলো দুইটি উদ্দেশ্য কাজ করে: রাজা অথবা প্রেসিডেন্টদের সাথে তাদের সহযোগীদেরকে রক্ষা করা এবং দ্বিতীয়ত, উম্মাহর শত্রু, ইহুদী এবং ক্রুসেডারদের রক্ষা করা।

এই বাহিনীগুলো খিলাফাহ এবং ইসলামিক আইন প্রতিষ্ঠার প্রতিটি এবং প্রত্যেকটি চেষ্টাকে বন্ধ করে দিচ্ছে। যারা ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তারা ওদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় এবং এমনকি তারা শান্তিপূর্নভাবে সরকারে পৌছতে চায় বুঝাতে চাচ্ছি কি ঘটেছিল অতীতে আলজেরিয়াতে তাদের বিরুদ্ধেও দাঁড়ায়। অন্যভাবে বলা যায় এই বাহিনীগুলোর উপস্থিতিতে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না।

ইসলামিক আইন বর্ননা করে যেকোন আবশ্যক(ফরজ) কিছু প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজনীয়তা আবশ্যক(ফরজ) হয়ে উঠে। ইসলামিক শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক(ফরজ), এবং আল্লাহতাআলার জন্য যুদ্ধ করা আবশ্যক(ফরজ), এবং ঐটি যদি এই বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ছাড়া প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না হয় তাহলে ঐটি(যুদ্ধ) আবশ্যক(ফরজ) হয়ে উঠে।

এই বাহিনীগুলো মুসলিম বিশ্বের মধ্যে নিজ ধর্ম ত্যাগকারীদের রক্ষক। তারা শরীয়াহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং যারা এইটি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে তাদের হত্যা করে। পাকিস্তান, সোমালিয়া এবং মাগরিবে তারা আমেরিকার জন্য মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। যদি এই বাহিনীগুলোর সাথে এই ঘটনাটি ঘটে তারা কিভাবে যেকোন জায়গায় তাদের নিন্দা করতে পারে যারা কিনা যুদ্ধ করছে এই বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে, তারা কিভাবে তাদেরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে অভিযুক্ত করছে?!এই ফিকহকে কি প্রকারের বিকৃত করা হয়েছে?

সৈন্যদের উপর নিন্দা করা উচিত যারা কিনা অতি নগন্য কিছু অর্থের বিনিময়ে নির্দেশ পালন করতে ইচ্ছুক ছিল যেখানে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল সোয়াতে মুসলিমদের হত্যা করার জন্য , লাল মসজিদে বোমা মারার জন্য, অথবা সোমালিয়াতে মহিলা এবং শিশুদের হত্যা করার জন্য বলে। এই সৈন্যরা আবেগ অনুভূতিহীন জানোয়ার,শয়তানের পূজারী যারা কিনা তাদের ধর্মকে কিছু ডলারের বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে। এই বাহিনীগুলো উম্মাহর এক নাম্বার শত্রু। তারা সৃষ্টির সবচেয়ে নিকৃষ্ট। যারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের জন্য রয়েছে প্রশংসা, এবং প্রশংসা তাদের যারা তাদেরকে হত্যা করতে গিয়ে শহীদ হয়।

জাজাকুমুল্লাহু খায়র।

কার্টেসি-#ইসলামের/পথে/খিলাফত/ব্যবস্থা/ #খিলাফত #CALIPHA
Powered by Blogger.